বিদ্যুৎ বিভাগের দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে ঐক্যেবদ্ধ হন

অভিজিৎ ব্যানার্জি, ঢাকা:  বিদ্যুৎ বিভাগের দুর্নীতি, অনিয়ম ও গ্রাহক হয়রানি গোটা দেশের মানুষের নাভিশ্বাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রাহক হয়রানি আজ ব্রিটিশ আমলের নীলকরদের অত্যাচারকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। দেশে প্রিপেইড মিটার সংযোগের নামে গ্রাহকদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। ডিজিটাল মিটারের ডিমান্ড চার্জ এবং ডিজিটাল কারসাজি নিয়ে আজ ২৯/০৯/২০২৫ইং সকালে রাজধানী ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের দ্বিতীয় তলায় তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক মতবিনিময় সভা করেন বিদ্যুৎ গ্রাহক ও সেচ পাম্প মালিক সমিতি।

এই আলোচনার সভায় আনাউর রহমান এর সভাপতিত্বে ভুক্তভোগী অনেক গ্রাহক এবং বিদ্যুৎ গ্রাহক ও সেচ পাম্প মালিক সমিতির অনেকে বক্তব্য রাখেন। সবার পক্ষ থেকে আনাউর রহমান বলেন, বর্তমানে আমরা ডিজিটাল মিটার ব্যবহার করে ১কি: হিসাবে ডিমান্ড চার্জ দিচ্ছি অন্য দিকে প্রিপেইড মিটার সংযোগ হলে প্রতিটি গ্রাহককে ৩ কি: হিসাবে ডিমান্ড চার্জ দিতে হবে। যেখানে আমরা বর্তমানে ১কি: ডিমান্ড চার্জ ৪২/- টাকা দেই, অন্যদিকে প্রিপ্রেইড মিটারের ক্ষেত্রে দিতে হবে ৪২×৩ = ১২৬/- টাকা এর সাথে মিটার ভাড়া ৪০/- টাকা সব মিলে ১৬৬/- টাকা আমাদেরকে অতিরিক্ত দিতে হচ্ছে। এই টাকা সম্পুর্নরূপে লুট হয় ৪ কোটি ৮৭ লক্ষ গ্রাহক প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা দেয়, যার কোন হিসাব আজ পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিভাগে নেই। আমরা ট্যাক্স, ভ্যাট, সার্ভিস চার্জ দেই যা আমরা দিব কেননা ঐ টাকা রাষ্ট্র পাবে, কিন্তু ডিমান্ড চার্জ ও মিটার ভাড়া আমরা দিবনা।

অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিল প্রদানের ক্ষেত্রে ০-২০০ ইউনিট পর্যন্ত প্রতি ইউনিটের মূল্য এক হতে হবে। সেক্ষেত্রে স্লাপ পদ্ধতির বিল বাতিল করতে হবে দেশে কুইকরেন্টাল ও বিদেশেীদের কাছ থেকে চড়াদামে বিদ্যুৎ ক্রয় করে সরকার টাকা অপচয় করছে এই দায় সম্পূর্ন গ্রাহকের উপর পড়ছে ঐসব চুক্তি বাতিল করে দেশে সরকারী ও বেসরকারী ভাবে সোলার পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে বিদ্যুৎ এর দাম কমাতে হবে। তাতে আমাদের পরিবেশ রক্ষা পাবে।

প্রিয় বন্ধুগন, গাইবান্দা জেলায় ২০১০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রায় ১০ কোটি টাকা বেশী বিদ্যুৎ বিল করেছে এজন্য আন্দোলন গড়ে উঠলে ঐসময়ে বিদ্যুৎ বিভাগে একটি তদন্ত হয় যাতে ২০১৪-২০১৬ সালের মধ্যে ৫ কোটি ২৭ লক্ষ টাকার অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল ধরা পড়ে। পরবর্তীতে ঐবিল সন্ময় করার কথা থাকলেও যার সব টুকু অতিরিক্ত বিল আজও সনায় হয়নি। এ ব্যাপারে দ্বায়ী ঐ কর্মচারীদের বিচারের কথা থাকলে আজও তাদের বিচার হয়নি। সব অতিরিক্ত বিল সনায় না করে প্রায় ১০০টির মতো মামলা দিয়ে গ্রাহক হয়রানী করা হচ্ছে যা আমরা আজও বন্দ করতে পারিনি। এ রকম সমস্যা সাড়া দেশে হচ্ছে।  আসুন বিদ্যুৎ বিভাগের দুর্নীতিগ্রস্ত আমলা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কর্তৃক বিদ্যুৎ গ্রাহকদের অর্থ চুরি করার জন্য সমস্ত অন্যায় সিন্ধান্ত প্রতিহত করি এবং দেশ ব্যাপি দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি এবং সংগ্রাম গড়ে তুলি।

উপরোক্ত আলোচনা শেষে বক্তাগণ যে সমস্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হন সেগুলো হলো –

১. প্রি-প্রেইড মিটার সংযোগ বন্ধ করতে হবে।

ডিমান্ড চার্জ ও মিটার ভাড়া বাতিল করতে হবে।

৩. স্লাপ পদ্ধতির বিল বাতিল করে ০-২০০ ইউনিট পর্যন্ত ফ্লাট পদ্ধতিতে বিল নিতে হবে।

৪. রেন্টাল-কুইকরেন্টাল সহ বিদেশ থেকে বেশী দামে বিদ্যুৎ ক্রয় বন্ধ করতে হবে।

৫. চাহিদা অনুসারে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রয়োজনী সক্ষমতা বাড়াতে হবে। পরিবেশ বান্দব নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে অধিক মনোযোগী হতে হবে। গ্রাহকদের হয়রানি বন্ধ কর। এ পর্যন্ত দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার

কর। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত কর।

More From Author

মাতৃভূমি হার্ট কেয়ারের হেলথ ম্যাগাজিন আপনার হার্টের চিকিৎসার সহায়ক হবে- ইঞ্জিঃ মোঃ মাইনউদ্দিন মিয়া

শিশুদের সহজলভ্য সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না, শিশু নির্যাতন নিয়ে লিডোর ৮ সুপারিশ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *